১৬ ডেইস অব অ্যাক্টিভিজম ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস: সমতা ও মর্যাদার পথে একসাথে”

[Khadija Khatun]

১৬ ডেইস অব অ্যাক্টিভিজম ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস: সমতা ও মর্যাদার পথে একসাথে”

১০ ডিসেম্বর, ২০২৫, বুধবার। পেঁচাকোলা কমিউনিটিতে এক ব্যতিক্রমী আয়োজন সহিংসতার বিরুদ্ধে ঐক্য ও স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বানে “১৬ ডেইস ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস” উপলক্ষে কমিউনিটির প্রবীণ নারী-পুরুষ কিশোর-কিশোরী শিশু এবং জবা, কৃষ্ণচূড়া, টিয়া, ও ইয়ুথ "চলো এগিয়ে যায়" টিমের সদস্যসহপ্রায় ৫০ জন মানুষ অংশ নেয়।
আলোচনার শুরুতেই সবার পরিচয়ের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে বন্ধনের সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে উঠে আসে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার নানা বাস্তব চিত্র—যা শুধু গল্প নয়, কারও কারও জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা।

প্রবীণ হেনা খাতুনের গল্প—১৬ ডেইস-এর আলোর সূচনা___
পরিচয়পর্ব শেষ হতেই কথা বলতে শুরু করেন প্রবীণ হেনা খাতুন। তাঁর কণ্ঠে জীবনের বহু সংগ্রাম, লড়াই ও টিকে থাকার এক নিঃশব্দ শক্তি। তিনি যখন নিজের জীবনের গল্প শোনাতে শুরু করলেন, তখন ছোট-বড় সবার চোখে এক আলোক ছটা দেখা গিয়েছিল।
দিলরুবার গল্প—বাধা ভেঙে এগিয়ে চলার সাহস---

এরপর উঠে আসে পেঁচাকোলা কমিউনিটির বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু দিলরুবার গল্প। জন্মের পর থেকেই সে ছিল অন্যদের থেকে আলাদা। তাই কমিউনিটির মানুষ থেকে শুরু করে স্কুলের সহপাঠীদের থেকে অবহেলা স্বীকার হতে হয়!!
কিন্তু ক্লাসে প্রথম হয়ে সে প্রমাণ করেছে—মনোবল আর আত্মবিশ্বাস থাকলে কোনো ‘অস্বাভাবিক’ মানুষ থাকে না; বরং দৃষ্টিভঙ্গিটাই অস্বাভাবিক হয়।তাই দিলরুবা সবাইকে বলে—
আমার মত কাউকে যেন অস্বাভাবিক মনে করা না হয়। সবাই সবাইকে যেন সমান চোখে দেখে।

তরুণ্য জীবনে বাল্যবিয়ের গল্প__
আজমী খাতুন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাল্যবিয়ের শিকার হওয়া আজমি তুলে ধরলেন তার জীবনের কঠিন দিনগুলো—পারিবারিক নির্যাতন, স্বামীর অবহেলা, শৈশব থেকে কেড়ে নেওয়া স্বপ্ন।
কিন্তু সল্টের মাধ্যমে টিয়া দলে যুক্ত হওয়ার পর তিনি বুঝেছেন নিজের শক্তির জায়গা। তিনি শিখেছেন—প্রতিকূলতার সামনে মাথা নত না করে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন।

আনোয়ারা খাতুনের গল্প—যৌতুক ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে একার লড়াই__
আনোয়ারা খাতুনের গল্প ছিল আরও এক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। এখনো তিনি শশুরবাড়ি ও স্বামীর কাছ থেকে যৌতুকের জন্য নির্যাতিত হন। তবুও তিনি ভেঙে পড়েননি। সব প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে তিনি এখন একাই সন্তানকে লালন করছেন, লেখাপড়া করাচ্ছেন এবং মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলার জন্য সংগ্রাম করছেন।

আসমানী খাতুনের আত্মস্বীকারোক্তি—অভিভাবকের ভুলের দায়__
এরপর কথা বলেন কমিউনিটির এক অভিভাবক—আসমানী খাতুন। একমাত্র মেয়েকে বিয়ের পর যে মানসিক নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়েছে, সে কথা বলতে গিয়ে তিনি নিজের ভুলের কথাও অকপটে স্বীকার করেন। আর সবার সামনে বলেন,
“আমার মতো ভুল যেন আর কোনো মা না করে।”

গল্পগুলোতে একে অপরের প্রতি সমর্থন ও সেতুবন্ধন করে।
হেনা, দিলরুবা, আজমি,আনোয়ারা, আসমানী এবং আরও অনেকের গল্প শুনে উপস্থিত সবাই একে অপরকে সমর্থন, প্রশংসা করেন ও মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। গল্পগুলো একে অপরের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা, সাহস এবং দৃঢ় বন্ধন তৈরি করেছে। কমিউনিটিতে যেন নতুন এক ঐক্যের শক্তি জন্ম নিল।
সবার মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন
সাহস ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি হয়।
কমিউনিটিতে ঐক্য ও বন্ধনের সৃষ্টি হয়।
শুরুতে নীরবতা থাকলেও অন্যের গল্প শুনে অনেকের মধ্যেই নিজের কথা বলার সাহস তৈরি হয়।
আগে এমন ব্যক্তিগত নির্যাতনের ঘটনা কেউ শেয়ার করতেন না। কিন্তু সল্ট পদ্ধতির কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে তারা নিজেদের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই অনুষ্ঠানে সাহস করে নিজেদের গল্প তুলে ধরেছেন।
কমিউনিটির অঙ্গীকার: কিশোর কিশোরী, তরুণ ও অভিভাবক সহ তাদের স্বপ্নের কথা বলেন। তারা স্পষ্ট কণ্ঠে জানান—যৌতুক ও বাল্যবিবাহ আমরা সবাই মিলে বন্ধ করবো। কাউকে অসম্মান করা হবে না, সবাইকে সমান চোখে দেখা হবে, পিছিয়ে পড়াদের সামনে এগিয়ে আনতে সবাই একসাথে কাজ করবো।

এই আয়োজন আমাদের মনে করিয়ে দেয়—পরিবর্তন সম্ভব, যদি আমরা সবাই একসাথে সাহস নিয়ে সামনে এগিয়ে যাই।

সল্ট পদ্ধতির আলো__
সল্ট পদ্ধতির মাধ্যমে এক গ্রুপের পরিবর্তনের গল্প অন্য গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে।
একজন আরেকজনকে প্রশংসা করে, উৎসাহ দেয়, পাশে থাকার অঙ্গীকার করে।
এর ফলে অংশগ্রহণকারীরা আরও সচেতন, ঐক্যবদ্ধ ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে।

10 December, 2025 Wednesday. An exceptional event in the Penchakola community called for unity against violence and moving forward on the path of dreams on the occasion of “16 Days and International Human Rights Day”. About 50 people, including elders, men, women, teenagers, children, and members of the Joba, Krishnachura, Tia, and Youth “Cholo Agiye Jay” team, participated in the event.

At the beginning of the discussion, a bond was created with each other through everyone’s introduction. Gradually, various real-life images of violence against women and children emerged—which are not just stories, but the real-life experiences of some.

The story of Praveen Hena Khatun—The beginning of the light of 16 Days___
As soon as the introduction ended, Praveen Hena Khatun started speaking. There was a silent power of life’s many struggles, battles, and survival in her voice. When she started telling the story of her life, a light shone in the eyes of everyone, young and old.
Dilruba's story—The courage to break barriers and move forward---
Then comes the story of Dilruba, a special needs child from the Penchakola community. Since birth, she was different from others. So she had to accept neglect from the people in the community and even from her schoolmates!!
But by becoming the first in the class, she proved—if you have morale and confidence, there is no 'abnormal' person; rather, the perspective is abnormal. So Dilruba tells everyone—
Don't think of someone like me as abnormal. Everyone should see everyone equally.
The story of child marriage in her young life__
Azmi Khatun. Azmi, who was a victim of child marriage at the age of just 13, shared the difficult days of her life—family abuse, her husband's neglect, her childhood dreams taken away.
But after joining the Tia team through Salt, she understood her own strength. She learned—life is about moving forward without bowing down in the face of adversity.

Anwara Khatun's story—Alone fight against dowry and oppression of women__
Anwara Khatun's story was another reflection of reality. She is still being tortured by her in-laws and husband for dowry. Yet she did not break down. Leaving all the adversities behind, she is now raising her children alone, educating them, and struggling to make them human beings.

Asmani Khatun's self-confession—Responsibility for the guardian's mistakes__
Next, a guardian of the community—Asmani Khatun—spoke. While talking about the mental torture that her only daughter had to face after marriage, she also frankly admitted her mistakes. And she said in front of everyone,
“May no other mother make the same mistake as me.”

In the stories, they support and build bridges for each other.

Hearing the stories of Hena, Dilruba, Azmi, Anwara, Asmani and many others, everyone present supported, praised and listened attentively to each other. The stories created new enthusiasm, courage and strong bonds between each other. It was as if a new power of unity was born in the community.
Everyone's mentality changed positively
Courage and confidence increased.
Unity and bonds were created in the community.
Although there was silence in the beginning, many people gained the courage to speak their own words after hearing the stories of others.
Earlier, no one would share such personal incidents of abuse. But after the SALT system started, they gradually used their strength and courageously presented their stories at this event.
Community pledge: Teenagers, young people and their guardians shared their dreams. They said in a clear voice - we will all stop dowry and child marriage together. No one will be disrespected, everyone will be seen equally, we will all work together to bring the backward to the forefront.
This event reminds us that change is possible, if we all move forward together with courage.

The Light of the SALT Method__
Through the SALT method, the story of change from one group spreads to another.
Each person praises, encourages, and pledges to be there for each other.
As a result, participants become more aware, united, and confident.

[Khadija Khatun]

Thank you apu

[Sadia Jafrin]

So inspiring! Thank you very much for sharing.